একজন চিত্রনায়কের সঙ্গে সত্যিকারের মন দেয়া নেয়া হয়েছিল : অঞ্জু ঘোষ

বাংলা সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রী অঞ্জু ঘোষ। অভিনয় জাদুতে ভক্ত ও দর্শকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন তিনি। অভিনয় গুণে একসঙ্গে দুই বাংলার দর্শকদের কাছে সমান জনপ্রিয়তা পান তিনি। যদিও তাকে এখন আর সিনেমায় দেখা যায় না।এবার ব্যক্তিগত জীবনের প্রসঙ্গ তুলে যা জানালেন অভিনেত্রী অঞ্জু ঘোষ।

দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জু ঘোষ। অঞ্জু ঘোষ যে ছবিতে থাকতেন প্রযোজক নিশ্চিত থাকতেন যে তার ছবিটি ব্যবসাসফল হবে। ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ ছবিতে তার প্রাণবন্ত অভিনয়ের জন্য তার গিনেস বুক অফ রেকর্ডসে নাম ওঠে। তাসখন্দ চলচ্চিত্র উৎসবে সম্মানিত হয়েছেন। এখন কেমন আছেন এই অভিনেত্রী? সম্প্রতি দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপচারিতায় বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন তিনি। অঞ্জুর কলকাতার বাসায় তার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। টানা ষোল বছর ধরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে শীর্ষস্থান ধরে রাখা এই অভিনেত্রী বর্তমানে খুবই নির্জন জীবনযাপন করছেন। কেমন আছেন উত্তরে অঞ্জু বলেন, খুব ভালো আছি। মাধ্যমিক পাশ করার পর আমি সিনেমায় প্রবেশ করি, টানা ষোল বছর শু/টিং আর শুটিং। ছুটছি আজ ঢাকা, কাল কক্সবাজার আর পরশু থাইল্যান্ড।

কখন রাত হচ্ছে আর দিন হচ্ছে জানতাম না। একসময় ব্যস্ত, এখন অফুরন্ত অবসরে সময় কাটাবেন কীভাবে? অঞ্জু ঘোষ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, আমার বাড়িতে মন্দির আছে, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান করে সময় কাটাই। আমার বাড়িতে দুর্গার মূর্তি আছে সেই সাথে পবিত্র মক্কা শরীফ, খাজা বাবার ছবি আছে। মানব ধর্মের চেয়ে বড় কোন ধর্ম নেই। আপনার জীবনে কি প্রেম এসেছে? এ অভিনেত্রী বলেন, অবশ্যই এসেছেন। এমন দিন গেছে যে সারা রাত ঢাকায় আমার বাসার দরজায় আমার জন্য অপেক্ষা করেছে এই বলে যে সে আমাকে দেখবে। প্রেমিকদের দীর্ঘ না/মের লাইন। তাদের নাম আজ আর নাই বা বললাম। সবাই এখন সংসার করছে। তারা কাউকে বিব্রত করতে চায় না। চলচ্চিত্র পরিচালক এফ কবির চৌধুরী এবং আপনার প্রেম ও বিয়ে যা সে সময় গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছিল।এ বিষয়ে কি বলবেন? নায়িকা বলেন, আমরা কখনো বিয়ে করিনি। আমার প্রোডাকশন থেকে প্রথম একটি সিনেমা বানিয়েছি। আমি অনেক টাকা বিনিয়োগ করি। কিন্তু যখন ছবিটি মুক্তি পেল, তখন এফ কবির জোর দিয়েছিলেন যে ছবিটি তার ড্রিমল্যান্ড প্রোডাকশন থেকে মুক্তি দিতে হবে – আমি বাধা দিলাম। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগে। আশ্চর্যের বিষয় হলো আমি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর বিয়ের সার্টিফিকেট জাল করা হয়েছে। এটা সত্য যে এফ কবির আমার শুভাকাঙ্ক্ষী ছিলেন। অনেক সময় কেটে গেল, বিয়ে করে সংসার শুরু করলেন না কেন? অঞ্জু বলেন, তখন আমার চারপাশে এত প্রেমিক ঘু/র ঘুর করতো সেটা আমি পাত্তা দিইনি। আমি এই অর্থে দেইনি যে আমি ভেবেছিলাম আমার অর্থের কারণে সবাই আমাকে চায়। সত্যিকারের ভালোবাসা পেলাম না। বাংলাদেশের ‘ম’ আদ্যক্ষরযুক্ত একজন চিত্রনায়কের সঙ্গে আমার সত্যিকারের মন দেয়া নেয়া হয়েছিল কিন্তু একটা সময় সে আমাকে ধোঁকা দেয়। আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি। তারপর আর সে পথে যাইনি। অভিনেত্রী বলেন, “যখন বিদেশি প্রতিনিধিরা কলকাতায় আসেন, সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা যদি তাদের দেখানো হয়, আমার ছবি ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ও তাদের পাশে দেখানো হয়। এটা সত্যিই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। আপনি কি আরও সিনেমা করতে চান? অঞ্জু ঘোষ বলেন, অবশ্যই করব। আমাদের সময়ের গল্প এখন খুব এ/কটা চলে না। সত্যি বলতে কি আজকালের খো/লামেলা দৃশ্য সত্যিই দুঃখজনক। আমি প্যান্ট-শার্ট-স্কার্টেও অভিনয় করেছি। জুডো কারাতে দৃশ্যে অভিনয় করেছি। কিন্তু এখনকার মতো নয়।

প্রসঙ্গত, জীবনের অনেক সময় কেটে যাওয়া প্রসঙ্গে তুলে নিজের সম্পর্কে বিভিন্ন কথা বলেন অভিনেত্রী অঞ্জু ঘোষ। শুধু তাই ব্যক্তিগত জীবনে কেন সংসার করেননি সে বিষয়েও জানান অভিনেত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *