চার বছরের প্রেম, অবশেষে বাংলাদেশ থেকে শূন্য হাতে ফিরে গেলেন ভারতীয় তরুণী

প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে দেশান্তরী হওয়া বিষয়টি নয়। ভালোবাসার মানুষকে পেতে জাত, ধর্ম, বর্ণ ছাড়তেও পিছুপা হন না তারা। আর সেই প্রিয় মানুষটিকে পেতে ভিন্ন দেশে পাড়ি জমায়। এবার তেমন ঘটনায় ঘটেছে ভারতীয় এক ছাত্রীর জীবনে।বাংলাদেশের যুবকের প্রেমের টানে দেশ ছাড়ে ওই ছাত্রী কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে।

কে না দে/খে ঘর বাঁধার স্ব/প্ন? সেই স্বপ্ন দেখেছেন কলকাতার রানার ঘাট এলাকার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস কলেজের এক ছাত্রীও। তাই তিনি গ/ত ৩ ডিসেম্বর ভোমরা বন্দর দিয়ে তার বাংলাদেশি প্রেমিকের কা/ছে ছুটে আসেন।

উদ্দেশ্য ছিল চট্টগ্রামের অলংকার মোড় এলাকার প্রেমিক সাইফুল খানের সঙ্গে দেখা করা। কিন্তু সেই প্রেমিক তার সাথে প্রতারণা করেছে। হৃদয় বিদারক যন্ত্রণা নিয়ে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা স্থলবন্দর হয়ে কলকাতা গেছেন ওই তরুণী।

মেয়েটির নাম কবিতা সরকার (২৬)। তিনি কলকাতা রানাঘাটের নন্দীঘাট বৃদ্ধকুল এলাকার বাসিন্দা। তার বাবা একজন রাজমিস্ত্রি। পরিবারটি বাবা-মা এবং একটি ছোট বোন নিয়ে গঠিত।

জানা গেছে, প্রায় দুই মাস চট্টগ্রামে থাকার পর গত ১ ফেব্রুয়ারি খুলনায় আসেন ওই তরুণী। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি খুলনা বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে ভিসার জন্য আবেদন করেন। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত তাকে ভিসা দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, কলকাতার ওই কলেজছাত্রী প্রেমের জন্য বাংলাদেশে এসেও প্রতারণার শিকার হন। বাংলাদেশে এসে তিনি বড় ভুল করেছেন। সে বুঝতে পারেনি ফেসবুকে ৪ বছর প্রেম করার পর তাকে প্রতারিত করা হবে। সেলসম্যানের চাকরির টাকা দিয়ে কলেজে পুড়াশুনার পাশাপাশি পাসপোর্ট ও ভিসা করেছিলেন তিনি। প্রথমে একবার ভিসা পেলেও বাংলাদেশে আসতে পারেননি।

কবিতা সরকার গণমাধ্যমকে জানান, চট্টগ্রামের অলংকার মোড়ের সাইফুল খানের সঙ্গে চার বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর তার সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসেন। প্রায় দুই মাস চট্টগ্রামে সাইফুলের কাছে তাদের ভাড়া বাসায় থাকেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি শেফালী সরকার খুলনায় এসে তার বিপদের কথা জানান। এছাড়াও তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ভারতে ফিরে যাওয়ার জন্য সহায়তা চান।

রায়েরমহলের বাসিন্দা শেফালী সরকার জানান, ৩ ডিসেম্বর ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার সময় ওই তরুণীর সঙ্গে তার দেখা হয়। ভোমরা বন্দরের বিনেরপোতা থেকে আমরা একসঙ্গে সাতক্ষীরায় আসি। তিনি চট্টগ্রাম যেতে আমার সাহায্য চান। তাকে বাসে করে চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দিলাম। দীর্ঘ দুই মাস পর, ছাত্রটি আমাকে ১ ফেব্রুয়ারি ফোন করে। ভারতে ফেরার বিষয়ে সহায়তা চায়। আমি সেদিনই রানীকে খুলনায় ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের কাছে নিয়ে যাই।

শেফালী সরকার আরও বলেন, ওই ছাত্রী আমাকে ‘মা’ ব/লে ডেকেছে। তাই আমি যতটা পেরেছি তার পাশে দাঁড়িয়েছি। বর্তমানে ওই মেয়ের সঙ্গে চট্টগ্রামের ছেলের কোনো সম্পর্ক নেই।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দিন প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে বাংলাদেশের যুবকের সঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখলেও তা পূরণ হয়নি ওই ছাত্রীর। প্রতারণার শিকার হয়ে শেষমেশ দেশের ফিরতে হয় তাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *