তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন চুন্নু

নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়কসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছে সরকারের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে বিরোধী দল বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় না তার প্রমাণ ‍১৪ ও ১৮ সালের নির্বাচন। তবে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচেন তারা বিশ্বাসী নন।তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই মন্তব্য করে যা বললেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জাতীয় পার্টি একটি নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচন নিয়ে এই মুহূর্তে নানা প্রশ্ন রয়েছে।

কেউ চান সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হোক, আবার কেউ চান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন বিশ্বাস করি না। নির্বাচিতরা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যে সুষ্ঠু নির্বাচন করবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে যৌথসভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

চুন্নু বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালে নির্বাচন হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বক্তব্য প্রমাণ করে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। নির্বাচন কমিশনের সদিচ্ছা থাকলে এবং সরকার চাইলেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য করতে সরকারকে ভূমিকা রাখতে হবে। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে একটি আসন শূন্য হয়েছে, আমরা সেই উপনির্বাচনে অংশ নেব। জাতীয় পার্টি তিনশ’ আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে নির্বাচনের আগে পরিবেশ দেখে সিদ্ধান্ত নেব।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, জিএম কাদেরের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ। জাতীয় পার্টিতে কোনো বিভক্তি নেই। আজ সকালে কথা হয় বিরোধী দলীয় নেতা ও দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদের সঙ্গে। আজকের যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন এরশাদের ছেলে রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদ। এছাড়া বহিষ্কৃতদের বিষয়ে যৌথ বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বহিষ্কৃতদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। যাইহোক, যারা অমার্জনীয় সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, দেওয়ানি মামলার কারণে পার্টির চেয়ারম্যান অনেক দিন প্রেসিডিয়াম বৈঠক করতে পারেননি। কয়েকদিন আগে মাননীয় হাইকোর্ট সেই নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করায় চেয়ারম্যান এখন মুক্ত। তাই যৌথ সভার আয়োজন করা হয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগে জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করতে পারি। এর আগেই সব জেলা সম্মেলন শেষ হবে। প্রতিটি বিভাগে বড় সমাবেশ করা হবে। একই সঙ্গে সারাদেশে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে প্রার্থী নির্ধারণ করা হচ্ছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আমাদের দলে যোগ দিচ্ছেন।

এর আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদেরের সভাপতিত্বে যৌথসভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *