
নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরপেক্ষ সরকারসহ নানা ইস্যুতে ক্ষমতসীন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে বিএনপি। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সংবিদানের বাইরে নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু বিএনপির দাবি দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সম্ভব নয় যার প্রমাণ ১৪ ও ১৮ সালের নির্বাচন। আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে বাধ্য করা হবে এমটিই বলা হচ্ছে দলটির পক্ষ থেকে। নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চায় বিএনপি মন্তব্য করে যা বললেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমেই দেশে একটি ভালো নির্বাচন সম্ভব। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, তারা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চায়।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন। দেশ বাঁচাও মানব বাঁচাও আন্দোলন আয়োজনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নরসিংদী জেলা আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকনের ওপর হা/মলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ছালেক রিকাবদারের কোমরে রশি ও হাতকড়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে।
মানববন্ধনে দুদু বলেন, কয়েকদিন পর নির্বাচন। বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসতে চায়। নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি এ পর্যন্ত ক্ষমতায় এসেছে। আমরা ভালো নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলেছি। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে চাই।
আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কারচুপির মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় আসতে চান, এই স্বপ্ন ত্যাগ করেন। আগামীর সরকার হবে গণতন্ত্রের সরকার। সেটা হলো বিএনপি সরকার। নির্বাচন পরবর্তী জাতীয় সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে দুদু বলেন, আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে। এবার আপনি কোনো ভাবে পার পাবেন না। কোনো উপায় নেই। আপনারা (আওয়ামী লীগ) যাই করুন না কেন, আপনাদের পদত্যাগ করতেই হবে; সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে।
বিএনপির গণতন্ত্রের নির্বাচন থেকে মুক্তির কোনো পথ আছে কি? আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা যে সংবিধান ধ্বং/স করেছেন তা এক মিনিটে ঠিক করা যাবে। বিএনপির দিকে বন্দুক ঘোরাবেন না। নিজের দিকে ঘোরান, তাহলে বুঝবেন কীভাবে সংবিধানকে ধ্বং/স করেছেন।
দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, আওয়ামী লীগের বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ২৭ দফা দিয়েছে বিএনপি। তাই আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, খায়রুল কবির খোকন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক ছিলেন। বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এমন ব্যক্তিকে আ/ক্রমণ করা মানে দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের ওপর আ/ঘাত করা। মু/ক্তিযোদ্ধা আবু ছালেককে কোমরে দড়ি বেঁধে ও হাতকড়া পরিয়ে আদালতে আনা হয়। এর মাধ্যমে ছালেককে কোমরে দ/ড়ি বাধা হয়নি, গণতন্ত্রের কোমরে দড়ি বাঁধা হয়েছে; দেশের স্বাধীনতা দড়ি দিয়ে বাঁধা। তাদের বিচার হওয়া উচিত।
মানববন্ধনে কথিত মু/ক্তিযুদ্ধের অনুসারীরা বাংলাদেশের মু/ক্তিযুদ্ধকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলেও মন্তব্য করেন দুদু।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডাক্তার মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, দেশ বাঁচাও মানব বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, সংবিধানের দোহায় দিয়ে আবার কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকতে চায় আওয়ামীলীগ সরকার মন্তব্য করেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা আবারও নতুন কৌশলের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার পাঁয়তারা করছে।